নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে তিন ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে স্মার্ট কার্ড বিতরনের সময় অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নে গত ৪জুন থেকে শুরু হয় জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড বিতরন কার্যক্রম। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী কোন ভোটারের কার্ড হারিয়ে গেলে প্রথমে পুরনো কার্ডটি তুলে তা জমা দিয়ে স্মার্ট কাড নিতে হবে। কিন্তু মাধবপাশা ইউনিয়নে ইউপি সদস্যর কাছে নির্ধারিত ফি বেশি দিয়েই মিলেছে স্মার্ট কার্ড। ঐ ইউনিয়নে স্মার্ট কার্ড বিতরনের প্রথম দিন থেকে শুরু করে শেষ দিন পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়। আর এর পিছনে চেয়ারম্যান জয়ানাল আবেদীনের ইন্ধনে মূল হোতা হিসেবে কাজ করছেন ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুমন, ২নং ওয়ার্ডের জাকির ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রাশিদা বেগম। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক মাধবপাশা ইউনিয়নের একাধিক ভোটার জানায়, “আমাদের ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে তাই স্মার্ট কার্ড আনতে গিয়ে সমস্যা পরি, পরে সুমন মেম্বার আমাদের সব সমস্যা সমাধান করে দেয় অবশ্য এ জন্য তাকে ৫শ’ টাকা দিতে হয়েছে। শুধু ৫’শ টাকাই না কারও কারও কাছ থেকে ৬০০ থেকে ৭০০টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।” প্রথম দুদিন বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নিলেও পরের দিন সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে যেন দুধে ধোয়া তুলসি পাতা হয়ে যায় সুমন, জাকির এবং রাশিদা। এলাকার সাধারন ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ভোটারদের উপর এমন জুলম কিভাবে তারা করছে এমনটি প্রশ্ন এখন জনমনে। অবৈধভাবে টাকা নেয়ার কারনে ভোটারদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে । জানা যায়, কোন ভোটারের কার্ড হারিয়ে গেলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারন ডায়েরী এবং সোনালী ব্যাংকে ৩৪৫টাকা জমা দিয়ে পুরনো কার্ডটি তুলে তা জমা দিয়ে স্মার্ট কাড নিতে হবে। কিন্তু সেখানে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ভোটারদের সহযোগীতার নামে নিজেদের পকেট ভারী করতেই ব্যস্ত সুচতুর তিন ইউপি সদস্য। এহেন কর্মকান্ড দেখে নিশ্চুপ ভূমিকায় ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল চেয়ারম্যান। তিনি যেন দেখেও না দেখান ভান ধরে আছেন। যদিও ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও এর কোন প্রতিবাদ করেননি। সূত্র বলছে, জাকির মেম্বার অসহায় ভোটারদের বিপদে খোঁজ খবর না নিলেও তাদের নামে কোন বরাদ্ধ এলেই যেন গিলে খেতে মরিয়া হয়ে উঠে তিনি। শুধু জাকির মেম্বারই নয় সুমনের বিরুদ্ধেও রয়েছে একই অভিযোগ। বয়ষ্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা সহ অসহায় ও দুঃস্থ ভোটারদের টাকা বাগিয়ে খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ভোটারদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নেয়ার বিষয়ে ইউপি সদস্য সুমনের কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে এই প্রতিবেদককে বলেন, এটা আমার আর ভোটারদের একান্ত বিষয়, আমি এই এলাকার জনপ্রতিনিধি তাদের কল্যানেতো আমি কাজ করবোই, এ নিয়ে এতো বাড়াবাড়ির কি আছে!” এবিষয়ে বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার সেকেন্ড অফিসার অরবিন্দু বিশ্বাস জানায়, “ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে নিয়মানুযায়ী থানায় জিডি করতে হয় কিন্তু মাধবপাশা ইউনিয়নে স্মার্ট কার্ড বিতরনের এ কয়দিন এয়ারপোর্ট থানায় কোন জিডি করা হয় নি।” এদিকে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার রিং দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply